কেশবপুরে হাতুড়ি বাহিনীর অফিস থেকে দেশীয় অস্ত্র ও ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার

প্রকাশিত: ৩:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০ | আপডেট: ৩:২৮:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০

মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর):
যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর দখলে থাকা একটি কক্ষ থেকে থানা পুলিশ দেশীয় অস্ত্র ও ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করেছে। এছাড়া তাদের দখলে থাকা বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখল মুক্ত করে গরুর দুধ দিয়ে ধুয়ে পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে কৃষকলীগের অফিসটি ২০১৪ সাল থেকে হাতুড়ি ও গামছা বাহিনী দখলে নিয়ে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, বাজার লুটসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করা হত। তাদের অত্যাচারে আতংকে থাকত কেশবপুরবাসি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করায় হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর সদস্যসহ তাদের গডফাদাররা গা ঢাকা দেয়। আওয়ামী লীগের নির্যাতিত নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ দলে দলে হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর সদস্যদের খুঁজতে থাকে। সাথে সাথে তাদের দখলে থাকা বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখলমুক্ত করে গরুর দুধ দিয়ে ধুয়ে তাদের অপকর্মের পাপমোচন করা হয় বলে জানান উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধোয়ামোছার সময় থানা পুলিশের উপস্থিতিতে হাতুড়ী বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটি খোলা হয়। এ সময় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে ওই বাহিনীর ব্যবহৃত ২টি ধারালো বেকী, ৪টি তলোয়ার, ১টি কিরিচ ও ফেনসিডিলের ৭টি বোতল উদ্ধার করে। এরপর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গরুর দুধ দিয়ে কক্ষটি ধুয়েমুছে ফেলে।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বলেন, গত ৬ বছরে আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকতে পারেনি। ৬ বছর পর আমি ও কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফাসহ দলের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে অফিসে এসে দেখি থানা পুলিশ হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটির তালা খুলে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করে। তিনি আরও বলেন, হাতুড়ি বাহিনী প্রধান খন্দকার আব্দুল আজিজ, গামছা বাহিনী প্রধান খন্দকার শরিফুল ইসলাম, আবু সাঈদ লাভলু, এস এম মাহাবুর রহমান, আলাল দিলু, শেখ জামাল উদ্দীন, তানজিল আহমেদদের গডফাদার বিশ্বাস শহীদুজ্জামান শহীদের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখল করে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, বাজার লুটসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করত। তাদের বিরুদ্ধে কেশবপুর ও মণিরামপুর থানায় ডাকাতি, বাজার লুঠ, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাছের ঘের দখলের অসংখ্য মামলা রয়েছে। দলীয় নেতা কর্মীরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হত। তাদের ভয়ে কেশবপুরবাসি ছিল আতঙ্কিত।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, দেশীয় অস্ত্র ও ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধারের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক