অশনির প্রভাবে সাতক্ষীরায় বিকাল থেকে হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২২ | আপডেট: ৪:৫৪:অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২২

ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে মঙ্গলবার বিকাল থেকে সাতক্ষীরায় হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে উপকুলীয় এলাকায় হালকা থেকে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় অশনির স্থলভাগে আঘাত হানার শঙ্কা কমলেও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের মানুষ রয়েছেন চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলাকে ঘিরে থাকা ৫ ও ১৫ নম্বর পোল্ডারের উপকূল রক্ষা বাঁধের ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ  অংশ নিয়ে ভাঙন আতংকে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ ও কালিন্দি নদী থেকে সমগ্র লোকালয়কে সুরক্ষা দেওয়া বাঁধের এসব অংশ নিচু হয়ে যাওয়ায় তা ভীতিকর অবস্থায় পৌঁছেছে।

স্বাভাবিকের তুলনায় নদীতে জোয়ারের পানি বাড়লে সংলগ্ন অংশের বাঁধ ছাপিয়ে ও ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢোকার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা।

যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, সমন্বয়ের ভিত্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোতে মাটি ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

শ্যামনগর উপজেলার উপকূলবর্তী কাশিমাড়ী, বুড়িগোয়ালীনি, গাবুরা ও কৈখালীর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, অব্যাহত ঢেউয়ের তোড়ে কৈখালী বিজিবি ক্যাম্প, ভামিয়া ও হরিশখালী এলাকার বাঁধ রীতিমত সরু আইলে পরিণত হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম জানান, তার এলাকার অন্তত ১২টি পয়েন্টের কয়েক কিলোমিটার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ার বাড়ার সঙ্গে ঝড়ো বাতাস একসঙ্গে আঘাত করলে গোটা ইউনিয়ন সাগরের সঙ্গে একাকার হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনিয়নের প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে ১৫টিরও বেশি সাইক্লোন শেল্টারসহ দ্বিতল ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদীর অব্যাহত ঢেউয়ে তদসংলগ্ন বাঁধের বিভিন্ন অংশ নিঁচু হয়ে গেছে। ভেতরের অংশে আউট ড্রেন ছাড়া চিংড়ি ঘের পরিচালনার কারণে এসব অংশের বাঁধের দু’পাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তা সরু হয়ে ভীতি ছড়াচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন কবলিত এসব অংশে মাটি ফেলে অশনি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার সুরক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি স্থান চিহ্নিত করে তা মেরামতের কাজ চলছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারসহ এলাকাবাসীকে এসব অংশের কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায় ৩৫ হাজার সিনথেটিক বস্তা বালু ভর্তি অবস্থায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা দূর্যোগ ব্যবস্তাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবেলায় জেলায় ২৮৭ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহন করতে পারবেন। এর মধ্যে উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরে ১৮১ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহন করতে পারবেন। অপরদিকে, উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনিতে ১০৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহন করতে পারবেন।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স