অর্থকরী ফসল হিসেবে পান চাষে সাতক্ষীরায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে

প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২৩ | আপডেট: ৫:৩০:অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২৩

অর্থকরী ফসল হিসেবে পান চাষে সাতক্ষীরায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পান চাষ শুরু করেছেন সাতক্ষীরার কৃষক। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় আবাদটি বাড়ছে এ অঞ্চলে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৪ হাজার ৬০০ বিঘা জমিতে পান চাষ হয়েছে, যা গত মৌসুমের তুলনায় ৩০০ বিঘা বেশি বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থকরী ফসল হিসেবে পান চাষে সাতক্ষীরায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হচ্ছে সাতক্ষীরার পান।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা গ্রামের পান চাষি সুকুমার ও সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর গ্রামের রঞ্জন মণ্ডল জানান, সাত-আট বছর ধরে পান চাষ করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে পান চাষ করেছেন। পান চাষে খরচ বেশি হলেও অত্যন্ত লাভজনক ফসল। গত বছর একই পরিমাণ জমিতে পান উৎপাদন করে ৩ লাখ টাকার ওপর লাভ হয় তার। বরজ বা বাগান পরিচর্যা, পানের ডগা রোপণ, খৈল-সার, সেচ বাবদ তিন বিঘা জমিতে পান চাষে তার খরচ হয়েছিল ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। উৎপাদিত পান বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। এতে তার ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়।

তারা আরো জানান, চলতি মৌসুমে খরচ গত বছরের তুলনায় আরো বেশি হতে পারে। কারণ খৈল ও সারের দাম বেড়েছে। চলতি মৌসুমে ৪ লাখ টাকার মতো উৎপাদন খরচ লাগতে পারে। তবে বর্তমান তার বরজে যে পরিমাণ পান দেখা যাচ্ছে তাতে ৭ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। এরই মধ্যে প্রায় ৩ লাখ টাকার পান বিক্রি হয়েছে।

পান চাষি রঞ্জন মণ্ডল জানান, এর আগে তিনি ধান, পাট ও সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন করতেন। কিন্তু তাতে উৎপাদন খরচের তুলনায় তেমন লাভ হতো না। তাই উপসহকারী কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী কয়েক বছর ধরে পান চাষ করছেন। বছরে সব ধরনের খরচ উঠিয়েও ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লাভ হয়।

একই গ্রামের পান চাষি তারাময়ী রানী জানান, কৃষক রঞ্জন মণ্ডলের দেখাদেখি চার বছর ধরে দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করেন তিনি। এতে উৎপাদন খরচ উঠিয়েও ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা লাভ হয় বছরে। তার উৎপাদিত পান সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজারে বিক্রি করেন। বর্তমানে প্রতি হাজার পান পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা দামে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, পান একটি অর্থকরী ফসল। তবে অন্য ফসলের তুলনায় এটির উৎপাদন খরচটা বেশি হয়। তার পরও পরিকল্পিতভাবে চাষ করতে পারলে খুবই লাভজনক। তাছাড়া দেশের বাজারে যেমন চাহিদা, তেমনি বিদেশেও বাংলাদেশী পানের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বছরে উল্লেযোগ্য পরিমাণ পান রফতানিও হয়।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক