কেশবপুরে ৪ দিন বন্ধের পর আবারও অবৈধ রোমান ব্রিকসে ইট উৎপাদন শুরু ! প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২০ | আপডেট: ২:৩১:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২০ মশিয়ার রহমান, কেশবপুর(যশোর): যশোরের কেশবপুরে গ্রামবাসির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন ২৪ মার্চ রোমান ব্রিকস ইট ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ২৯ মার্চ থেকে আবারও ভাটাটি ইট পোড়ানোসহ তার সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, ভাটা মালিক হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ওই ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ৩০ মার্চ ভাটার কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে পুনরায় কৃষক আব্দুস সাত্তার জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের আবুবকর ছিদ্দিক ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের কাস্তা চৌরাস্তা মোড়ে অবৈধভাবে রোমান ব্রিকস নামের ইট ভাটাটি স্থাপণ করেন। ওই ভাটাটির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের কোন লাইসেন্স নেই। এ কারণে ভাটা স্থাপনের বিরুদ্ধে এলাকার শত শত কৃষক বিভিন্ন স্থানে অভিয্গো দেয়াসহ আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলেন। এতে কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দারস্থ হয়ে ওই ভাটার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে। যার নং- ২১২১/১৮। হাইকোর্টের বিজ্ঞ বিচারক মো. আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী ভাটার কার্যক্রম বন্ধে প্রথমে ৬ মাসের ও পরবর্তীতে ১ বছরের নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। এদিকে ভাটা মালিক এ রায়ের কোন তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক ভাটায় আগুন দিয়ে ইট উৎপাদন শুরু করে। ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে কেশবপুরের তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানূর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ওই ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে ভাটা মালিককে ৬ মাস জেল ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া, ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারী হাইকোর্টের ৩৩ নং বেঞ্চের শুনানীতে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স নিয়ে ভাটাটি পরিচালনা করবেন বলে ভাটা মালিক হাইকোর্টে অঙ্গীকার দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এসময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে পত্র দেয়া হয় যশোর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে। চলতি বছর ওই ভাটা মালিক এসব আইনের কোন তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে ম্যানেজ করে ভাটায় আগুন দিয়ে ইট উৎপাদন ও বিকিকিনির শুরু করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ মার্চ ওই অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসির পক্ষে আব্দুস সাত্তার যশোরের জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ মার্চ প্রশাসন ওই ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ২৯ মার্চ থেকে আবারও ভাটাটি ইট পোড়ানোসহ তার সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে ৩০ মার্চ তিনি পুনরায় কৃষক আব্দুস সাত্তার জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগটি দাখিল করেছেন। বাদির অভিযোগ, ভাটাটি চালুর বিষয়ে প্রশাসনকে বার বার অবহিত করা হলেও তারা দেখেও না দেখার ভান করছে। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারা দেশ যখন সামজিক দূরাত্ব বজায় রেখে চলেছে ঠিক তখনই শ্রমিক দিয়ে কাঁদা ও ইট তৈরি, ভাটায় আগুন দেয়াসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে চাচ্ছে। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাটা মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া অন্য সকল কাগজপত্র ম্যানেজ করে ভাটায় ইট উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রশাসন না চাইলে ভাটা বন্ধ করে দেব। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা বলেন, ভাটায় আগুন দেয়া হয়েছে। তা আমি জানি না। ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক কেশবপুর অবৈধ ইটভাটা সংবাদটি পড়া হয়েছে ২১০ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু কেশবপুরে মৎস্য চাষীরা পেল মাছের পোনা খাদ্যসহ বিভিন্ন উপকরণ