সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় আরও ৭জনকে জেরা

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২০ | আপডেট: ১১:৪৭:পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২০

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ৭ জন সাক্ষীকে জেরা করেছে আসামীক্ষের আইনজীবীরা।

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ছাড়া মামলার বাদির পুনঃরায় সাক্ষীর আবেদন প্রত্যাহার করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষ হলো।

অতিরিক্ত অ্যাটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমানের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এ ছাড়া এই মামলার প্রধান আসামী সাবেক সাংসদ ও সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব এ মামলায় সাজা হতে পারে এমন আশঙ্কায় বিদেশে পালাতে পারেন আশঙ্কা করে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তার পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখার আবেদন জানিয়েছে।

আদালতে যেসব স্বাক্ষির স্বাক্ষ্যদের জেরা করা হয়েছে তারা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহম্মেদ, আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, শেখ হাসিনার তৎকালীন ক্যামেরা পার্সন শহীদুল ইসলাম জীবন, বাস চালক মোঃ নজিবুল্লাহ, সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সরদার মুজিব, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আবু আহম্মেদ ও সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি অ্যার্টর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, সহকারি অ্যার্টনি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট তামিম আহম্মেদ সোহাগ, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ওসমান গনি, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী, অ্যাডভোকেট মোজাহার হোসেন কান্টু, অ্যাডভোকেট আজাহার হোসেন প্রমুখ।

আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ(২), অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু প্রমুখ।

প্রসঙ্গত: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৎকালিন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।

এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম। সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আপীল আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চতর আদালত।

এরপর রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

 

এসজি/ডেক্স


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক। ডেক্স