ডুমুরিয়ায় ‌প্রথম বেগুনী রঙের দুলালী সুন্দরী ধান চাষ

প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০ | আপডেট: ১০:২৯:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০

ডুমুরিয়া উপজেলায়‌  মাঠজুড়ে সবুজ ধান, হালকা বাতাসে দুলছে আর সোনালি রোদে চিকচিক করছে।  চারদিকে সবুজে ভরা এমন ধান খেতের মধ্যে হঠাৎ আড়াই শতক জমিতে বেগুনি রঙে কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। যেন সবুজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে বেগুনি। কারো কারো মনে হতে পারে পোকার আক্রমণে অথবা রোগবালাইয়ের সংক্রমণে সারা খেতের ধান বেগুনি হয়ে গেছে। আসলে এটি এক ধরনের ধানের জাত, যার ধান ও চালের রঙ বেগুনি। এমনকি ভাতও বেগুনি। 

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস
 
জানা যায়, দেশে প্রথমবারের মতো এ জাতের ধান চাষ করেছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের দুলালী বেগম। সুন্দরগঞ্জের দুলালীর নামানুসারে এই ধানের নামকরণ করা হয় ‘দুলালী সুন্দরী’। পরে প্রথমবারের মতো খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় এটি চাষাবাদ হওয়ায় এক নজর এই দুলালী সুন্দরীকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। কেউ কেউ পোজ নিয়ে তুলছেন ছবি।
আবার কেউ ধানের গোছ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। দুলালী সুন্দরীকে শেষ পর্যন্ত ঠিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন ডুমুরিয়ার রুদাঘরা ইউনিয়নের শোলগাতী-মিকশিমিল এলাকার কৃষক অমল দাশ।
রূদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশ দিয়ে শোলগাতী সরদারের মোড় যেতেই চোখে পড়ে এ খেত। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যে মিকশিমিল এলাকার অমল দাশ এবং মিন্টু দাশ নামের দুজন কৃষক দুলালী সুন্দরী ধান চাষ করেন।
এ ধানে গোছাপ্রতি ১৮ থেকে ২৮টি শিষ ধরে। একটি শিষে ১৬০ থেকে ৩১৩টি পর্যন্ত ধান যায়। আমনের থেকে বোরো মৌসুমে এটির ফলন ভালো পাওয়া যায়।
ডুমুরিয়ার রূদাঘরা ইউনিয়নের মিকশিমিল এলাকার কৃষক অমল দাশ জানান, দ্য সলভেশন আর্মি নামের এক উন্নয়ন সংস্থা থেকে ১ কেজি ‘দুলালী সুন্দরী’র বীজ পাই। তারা আমাকে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। আমার দুইটি জমিতে, একখানে আড়াই কাঠা এবং আরেকখানে ৪ কাঠা জমিতে এ ধানের চাষ করি। তবে ৪ কাঠা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। বাকি আড়াই কাঠার ধান রয়েছে।
প্রতিদিন খেতে অনেক মানুষ আসে। কেউ ছবি তোলে। আবার কেউ কেউ ধানের গোছ তুলে নিয়ে যায়। খেত রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকেও আমাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কৃষি অফিস থেকে লোক এসে দেখভাল করছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন। আশা করি, ফলন ভালো হবে।
ডুমুরিয়া উপজেলার উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার দেবনাথ জানান, নতুন জাতের ধান হওয়ায় সেটি রক্ষা করা একটু কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ধানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ অলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা নিয়মিত দেখভাল করছি। অনেক কৃষকের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এ ধানের বীজ সংরক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন জানান, ‘দুলালী সুন্দরী’ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ডুমুরিয়াতে চাষ হচ্ছে। এটি দেখতে বেগুনি হওয়ায় কৌতূহল বাড়ছে। ‘দ্য সলভেশন আর্মি’র সহযোগিতায় তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মাঠে বিভিন্ন সময়ে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করি ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

আপনার মতামত লিখুন :

গাজী আব্দুল কুদ্দুস। নিজস্ব প্রতিবেদক। চুকনগর, খুলনা