ডুমুরিয়ায় শ্রম বিক্রয়ের হাট!

প্রকাশিত: ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১ | আপডেট: ৩:৪৬:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
ডুমুরিয়ায় হাটে চলে মানুষের শ্রমবেচা কেনা। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সারাদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মত মানুষের শ্রম বেচার হাট বসে ডুমুরিয়ার কালিবাড়ী মোড় এলাকায়। সপ্তাহে দুইদিন অথ্যাৎ শুক্রবার ও সোমবারে এ হাতে শ্রম বা মানুষ বিক্রয় হয়। অভাবের তাড়নায় নাক লজ্জা ভুলে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটানো বা তাদের মুখে তিন বেলা একমুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য এভাবেই তারা হাটে বিক্রয় হয়। সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা জেলার মানুষ এ হাটে বিক্রি হয়।
 
প্রতি বছরের ন্যায় ডুমুরিয়ায় এ বছরও হাট বসেছে শ্রমিকের। সোমবার দুপুরে ডুমুরিয়ার উপজেলা সদরের কালিবাড়ি এদৃশ্য চোখে পড়ে। অভাবী এসব শ্রমিকদের মজুরিতে বনিবনা হলে মহাজন কৃষকের পিছু পিছু চলে যাচ্ছেন তাদের বাড়ি। এসব শ্রমিকরা দিনভিত্তিক কিংবা সাপ্তাহিক চুক্তিতে কাজে যোগ দিচ্ছেন। দেখা যায় দিন ভিত্তিক ৪৫০টাকা ও সাপ্তাহিক ২৮০০-৩০০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে শ্রমিকরা।
 
মহাজন কৃষকদের সঙ্গে দরদামে আলোচনার পর শ্রমিকরা তাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের কাপড়-চোপড়ের পুটলি, ধান কাটার কাস্তে নিয়ে পিছু পিছু যাচ্ছেন তাদের বাড়িতে। তবে শ্রম হাটে শ্রমিক বেচাকেনার বিষয়ে দর দাম নির্ভর করে বয়সের ওপর।শারীরিকভাবে দুর্বল ও বয়স্কদের দাম যুবকদের তুলনায় কম।
 
কয়রা থেকে আসা শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি গত তিন দিন ধরে ডুমুরিয়ায় এসেছি। এ কয়দিন কেউ কাজে নেয়নি। তবে আজ (সোমবার) কাজে যাচ্ছি। গত বছর এ মৌসুমে শ্রমিকদের মজুরি একটু কম ছিল। এ বছর মজুরি অনেকটাই বেড়ে গেছে। মাস খানেক কাজ করতে পারলে বাড়িতে অনেক টাকা পয়সা নিয়ে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
 
মনিরামপুরের ইকবল হোসেন নামে আরও এক শ্রমিক বলেন, দেশে কাজ নেই। তাই হাটে বিক্রি হতে এসেছি। বিক্রয়ের অপেক্ষায় আছি। মালিকের সাথে চুক্তি সম্পন্ন হলেও তার সাথে চলে যাব।
 
উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের শিবনগর এলাকার কৃষক রিপন মন্ডল বলেন, আমার ৩০বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিক নিতে এসেছি। ১২জন শ্রমিকের সাথে কথা হয়েছে সাপ্তাহিক ৩হাজার টাকা দরে। আরও কয়েকজনকে নিতে পারলে তাদের নিয়ে চলে যাব। 
 
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বছর দুই মৌসুমে জেলার বাইরে থেকে কিছু অভাবী মানুষ ডুমুরিয়া এলাকায় আসেন শ্রম বিক্রি করতে। অন্য বছরে তুলনায় এবছর শ্রমিকের বাজারও ভাল।

আপনার মতামত লিখুন :

গাজী আব্দুল কুদ্দুস। নিজস্ব প্রতিবেদক। চুকনগর, খুলনা