পাটকেলঘাটায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে মদখাওয়া লাইসেন্স জমা দিলেন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে

প্রকাশিত: ৯:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯ | আপডেট: ৯:২৮:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯

ডেক্স রিপোর্ট:

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার খলিষখালীতে মদ খাওয়া লাইসেন্স স্বেচ্ছায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহযোগীতা চেয়েছেন এক মাদকসেবী। মাদকসেবী কমল কুমার রায় থানার খলিষখালী ইউনিয়নের চোমরখালী গ্রামের মনরঞ্জন রায়ের ছেলে।
বুধবার(৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কমল রায় স্ত্রী শ্বাশুড়ীসহ খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়। এসময় তার মদখাওয়া সরকারী লাইসেন্স (যা স্বারাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে ইস্যুকৃত) চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমানের কাছে তুলে দেন। কমল রায় এসময় জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে মাদক সেবন করে আসছে। এর ফলে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ১৬ বিঘা কৃষি জমির বেশির ভাগই বিক্রি করতে হয়েছে মাদক সেবনের জন্য। মাদক সেবন করে কমল রায় প্রতিনিয়ত তার স্ত্রী পপি রায়কে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। মাদকাসক্ত কমল রায়ের নির্যাতন সইতে না পেরে তার স্ত্রী পপি রায় কয়েক দফায় বাবার বাড়ী শ্যামনগরে চলে যায়।
কমল দম্পত্তির একমাত্র মেয়ে পিংকী রায় এখন স্থানীয় একটি স্কুলের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। বাবা মাদকাশক্ত হওয়ায় তার শিশু কন্যাকেও সামাজিক বঞ্চনার শিকার হতে হয় এমনটি জানালেন কমল রায়ের স্ত্রী পপি রায়। বিষয়টি জানার পর খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান কয়েক দফায় মাদকসেবী কমল রায়কে স্বাবাভিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানান। তিনি স্থানানীয় গ্রামবাসীকেও সহায়তা চান স্বাভাবিক জীবনে কমল রায়কে ফেরাতে। কয়েক দফায় গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে তার খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান।
এর আগে শ্যামনগরে শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে মদখেয়ে মাতলামী করার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। দুই বছর পূর্বে মাদক সেবন করে স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নির্যাতন করার অভিযোগে পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদন্ডও হয়। দীর্ঘদিন সাজা ভোগের পর বাড়ীতে এসে পুনরায় মাদক সেবন করা ও এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করার কারনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে কাউন্সিলিং করেন। কয়েক দফায় কাউন্সিলিং করার পর বুধবার সকালে খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়ে কমল রায় স্বেচ্ছায় মদ খাওয়া সরকারী লাইসেন্স বতিলের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট জমা দিয়ে সহায়তা চান। এসময় তার স্ত্রী পপি রায় স্বামীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতেও সহয়তা চান।
ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান বিষয়টি স্বিকার করে জানান, কমল রায় দীর্ঘদিন মদ খেয়ে এলাকায় মাতলামী করত। পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে অত্যাচার করত সে। বিষয়টি তার স্ত্রী পপি রায় ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে কমল রায়কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়। কমল রায়ের মাদকের লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/মো: আমিনুর রহমান/ডেক্স রিপোর্ট


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক