লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম, তালায় হলুদ চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২১ | আপডেট: ৭:৪৩:অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২১
উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন অঞ্চল তালা উপজেলায় এবার হলুদের আবাদ বৃদ্ধি, বাম্পার ফলন সহ সকল লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
 
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে বেলে বা বেলে-দোআঁশ মাটিতে হলুদ সোনা বা হলুদ চাষ করে তালা উপজেলার কৃষকরা এখন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।গত বছর হলুদ চাষের জন্য তালা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫০ হেক্টর জমি, এবং অর্জন হয়েছিল ৩৫০ হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে হলুদের আবাদ। এ বছর হলুদের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে, লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৪১০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কৃষি অধিদপ্তর তালা।
 
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার তালা সদর,খলিলনগর,তেতুলিয়া, জালালপুর,কুমিরা,ধানদিয়ার চাষীরা হলুদ চাষ করেছেন।এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হচ্ছে তালা, খলিলনগর ও জালালপুর ইউনিয়েনে কানায়দিয়া এলাকায় ও পাটকেলঘাটা কুমিরা ইউনিয়নে। এ উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে লাভজনক ফসল হিসেবে হলুদের চাষ হয়েছে। এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জুড়ে চাষীরা জমিতে পরিচর্যা করছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, হলুদ চাষ খুবই লাভজনক। 
 
হলুদ চাষ সাধারণত জৈষ্ঠ মাসের শেষে আষাঢ় মাসের শুরুতে হলুদের বীজ লাগাতে হয়। প্রতি বিঘাতে ৪ থেকে ৫ মন হলুদের বীজ লাগে। হলুদ মাত্র ৬ -৮ মাসের মধ্যেই উঠানো যাই।
বিঘা প্রতি হলুদ ৭০-৮০ মণ হয়ে থাকে । এক বিঘা জমিতে হলুদের আবাদ করতে খরচ হয় মাত্র ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর প্রতিমণ হলুদ বিক্রি হয় ১হাজার থেকে ১হাজার ২ শত টাকা।
 
হলুদ চাষে লাভ আর লাভ। কৃষকরা বলেন, হলুদ বিক্রি করতে কষ্ট হয় না। বাজারে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকাররা হলুদ কিনে নেই । তালা সদর ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম ও রমজান হাওলাদার ও কামরুল ইসলাম   জানান, প্রতি বিঘাতে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ৭০ থেকে ৮০ মণ হলুদ পাওয়া যাই, যার বাজার মূল্য ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এতে বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ থাকে। তাদের মতে তিন – চার বিঘা জমিতে হলুদ চাষ করে ৪ -৬ বছরে লাখপতি হওয়া সম্ভব। 
 
অন্যদিকে তালা উপজেলা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বারুইহাটি, আগোলঝাড়া,ভায়ড়া, ডাংগানলতা এবং খলিলনগর ইউনিয়নে দক্ষিণনলতা ,মহান্দী,তেতুলিয়া ইউনিয়নে তেতুলিয়া ও শুকদেবপুর গ্রামে প্রচুর পরিমাণে হলুদ চাষ হয়েছে। খলিলনগর ইউনিয়ন এর মহান্দী গ্রামের কৃষক মুনছুর হোসেন জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে এবার হলুদের চাষ করেছে শেষ পর্যন্ত ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হবে , বাজার দর স্বাভাবিক থাকলে দেড় থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা মতো বিক্রি হবে। 
 
তালা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন  জানান তালা উপজেলায় গত বছর ৩৫০ হেক্টরের কিছু বেশি পরিমাণ জমিতে হলুদের চাষ হয়েছিলো এবং লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছিলো । এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪১০ হেক্টর হবে। তালা এলাকার হলুদের চাহিদা অন্য জেলা ও বিভাগীয় শহরে ব্যাপক রয়েছে।তালা উপজেলার কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে,আমরা সর্ব সময় কৃষকদের সেবা দিয়ে  থাকি। আবহাওয়া উপযোগী থাকায় এই উপজেলায় ফসলের উৎপাদন খরচ খুব কম,পাশাপাশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন খুব কম,গত বছরের তুলনায় এবার হলুদের আবাদ বেড়েছে লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করবে।

আপনার মতামত লিখুন :

এম.এ মান্নান। নিজস্ব প্রতিবেদক। তালা, সাতক্ষীরা