কেশবপুরে গো-খাদ্যের উচ্চ মূল্যে খামারীরা বিপাকে প্রকাশিত: ৭:৫৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২১ | আপডেট: ৭:৫৫:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২১ যশোরের কেশবপুরে গো-খাদ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকসহ খামার মালিকরা। গত বছর নদীর নাব্য না থাকায় অধিকাংশ ঘেরে বোরো আবাদ না হওয়ায় বিচলীর তীব্র সংকটের সংকট দেখা দেয়। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে গৃহপালিত পশুর খাদ্যের যোগান দিতে গিয়ে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, কেশবপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে ১৯২টি গরুর খামার রয়েছে। এসব খামার ও বিভিন্ন বাড়িতে ৮২ হাজারটি গৃহপালিত পশু লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রতি বছর কেশবপুরে প্রায় ১৯ হাজার ৫৭৯টি গরু, ছাগল, ভেড়া কোরবানি দেয়া হয়ে থাকে। এসব পশু এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে অন্যত্র বিক্রি করা হয়। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৬৫ হাজার লিটার গরুর দুধ উৎপাদন হয়। এ দুধ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হয়। এসব পশু পালনে ও ভালো মানের দুধ উৎপাদনে বিচলীসহ প্রচুর দানাদার গো-খাদ্যের প্রয়োজন। জানা গেছে, গত বছর সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হলেও ধান সংগ্রহকালে শেষ মূহূর্তে বৃষ্টিপাত হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নিচু জমির বিচলী পচে নষ্ট হয়। ফলে বিচলীর তীব্র সংকটের কারণে বাজার মূল্যও বেড়ে যায়। বিচলীর এ সংকটের সুযোগে যশোরের বার বাজার ও তার আশপাশের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ভোরে বিচলী নিয়ে আসে কেশবপুর পাইলট স্কুলের পাশে বিক্রি করতে। বেতীখোলা গ্রামের কৃষক বিমল রায় বলেন, গত বছর জলাবদ্ধতার কারণে তাদের বিলে কোন ফসল উৎপাদন হয়নি। বিচলীর উচ্চ মূল্যের কারণে তার এলাকার শতশত কৃষক ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার দূর বুড়িভদ্রা নদী থেকে শেওলা সংগ্রহ করে গুরুকে খাওয়াতো। কিন্তু এখন ওই নদীতে পানি না থাকায় তাও সংগ্রহ করতে পারছি না। এছাড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২১ দিন ধরে চলমান লকডাউনে গরুর শুকনো খাবারের দামও বেড়ে গেছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজী খুদ ৪০ টাকা, ভূষি ৩৫ টাকা, ভূট্টার গুঁড়া ২৩ টাকা, ক্যাটল ফিড ৩২ টাকা, সরিষার খৈল ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লকডাউনের কারণে গরুর দামও কমে গেছে। এ অবস্থায় তারা গরু বিক্রি করতে পারছেন না। আবার গরুর খাবার কিনতেও পারছেন না। ফলে তারা পড়েছেন বিপাকে। দোরমুটিয়া মোড়ের খামার মালিক ব্যবসায়ী বিষ্ণুপদ দাস বলেন, তিনি তার মিল ঘরের পাশে গরুর খামার করেছেন। তার খামারে ২২টি গরু রয়েছে। প্রতি কাউন বিচলী ৬ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে বিচলীর সংকটের কারণে গরুকে দানাদার খাবার খায়ানো হচ্ছে। এতে গরুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে খামার মালিকরা এ ব্যবসা থেকে সরে যাবেন বলে তিনি মনে করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অলোকেস সরকার বলেন, এ উপজেলায় প্রতিদিন খড়ের (বিচলী) চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার কেজী। প্রতি মৌসুমে যে ধান উৎপাদন হয় তাতে চাহিদা মিটে যায়। ধান ওঠার আগে কিছু বিচলীর সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান উঠে গেলে বিচালীর উচ্চ দাম বা সংকট কেঠে যাবে। সংবাদটি পড়া হয়েছে ১৪০ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে সাবেক ইউপি মেম্বারের আত্মহত্যা কেশবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে নারীসহ গুরুতর আহত ৪