কপিলমুনিতে নেট আর পলিথিনের খুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন কাটান সিদ্দিক প্রকাশিত: ১:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২০ | আপডেট: ১:৪৩:অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২০ ওদের কষ্টের যেন সীমা নেই। চাল আনলে খাওয়া জোটে নতুবা নয়। তার উপর বর্ষা মৌসুমে ঘরের চালে খড় নেই, আছে পলিথিন বিছানো। কপিলমুনি সদর থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তরে কাশিমনগর নিঃভৃত পল্লীর এক কোণে তাদের অবস্থান। দু’মুঠো অন্ন আর মাথা গোজার মত একটু আশ্রয় যেন ভাবতেই পারে না। কে দেবে একটু সহায়তা? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, ছিদ্দিক ও আঞ্জুয়ারার বসবাসের আশ্রয় টুকু ছেড়া-ফুটো পলিথিন দিয়ে ঢাকা। বেড়া আছে বলে মনে হয় না। রান্না খাওয়া একই পলিথিনের খুপড়ির নিচে। একমাত্র অবলম্বন একটি গরু-বাছুর নিয়ে আছে চরম বিপাকে যা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। বর্তমান সময়ে দারিদ্রসীমার নিচে যে এমন পরিবার আছে তা ভাবা যায় না। যাদের সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার কথা, মাথা গোজার মত একটু আশ্রয় থাকার কথা তা যেন তাদের কাছে এখন স্বপ্নের মত। ছিদ্দিক দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। বর্তমানে কপিলমুনি ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিদ্দিক সরদার (৪৮)। স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৩৮), পুত্র রাশেদ (১০) ও কন্যা রাশিদা (১২)কে নিয়ে পিতা মৃতঃ মুকিতার সরদারের রেখে যাওয়া ৪/৫ শতক আয়তনের ভিটামাটি কোন রকমে আকড়ে ধরে আছে। বঙ্গবন্ধু সৈনিক ছিদ্দিক অদ্যাবধি কোন প্রকারের সাহায্য সহায়তা কারো কাছ থেকে পায়নি। আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। করোনা ও আম্ফান পরবর্তী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা ব্যাক্তিগত কোন সাহায্য প্রাপ্তি তালিকায় তাঁর নাম উঠেনি। ছিদ্দিক পরিবারের একমাত্র আয় সক্ষম ব্যাক্তি। বর্তমানে গাভীর দুধ বিক্রি করে চাল আনলে খাওয়া জোটে, নতুবা নয়। আর্থিক সংকটে বর্তমান চিকিৎসা বন্ধ, ইচ্ছা থাকলেও ছেলে মেয়ের লেখা পড়া করাতে পারছেন না। রাত হলে বা বর্ষা পড়লেই তাদের অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। সংসার নামক ঘানি টানতে গিয়ে অনেক পরিবারবর্গ নিয়ে বড়ই অসহায় তিনি। মহাজনের অব্যাহত চাপের মুখে হয়তোবা এবার একমাত্র অবলম্বন গরুটা বিক্রি করতে হতে পারে। কেআরআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রহমান লোক মারফত ছিদ্দিক পরিবারের অবর্নণীয় দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে তিনি বিষয়টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি যুগোল কিশোর দে ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওসার আলী জোয়াদ্দারকে অবহিত করলে সরজমিনে পরিদর্শণ করে ছিদ্দিক পরিবারের মাথা গোজার আশ্রয়ের দূর্দশা লাঘবে তাৎক্ষনিকভাবে চেয়ারম্যান ২বান টিন ও আ’লীগ সভাপতি চলার সাথী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনিয় বাঁশ খুঁটি সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। সিদ্দিকের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম আক্ষেপ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমাদের কথা আপনাদের লিখতে হবে না। আমাদের কোন কিছু লাগবে না।” সিদ্দিক সরদার বলেন, “এক সময় আমার সবি ছিল কিন্তু আজ আমি নিঃস্ব। একটি ঘটনার জের ধরে বেধড়ক মারপিট ও থানায় অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় আড়াই মাস জেলের ঘানি টান। পরবর্তীতে জামিন পেয়ে আমার চিকিৎসা ব্যয়ে ও উক্ত মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে ৬/৭ বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরে ঘুরে রেহাই পেলেও অর্থ কড়ি, জীবন যৌবন সব শেষ হয়ে গেছে। আজ আমি শ্বাসকষ্টের রুগী ও চোখে দেখতে পাই না।’ সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৮৯ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কপিলমুনিতে শিশু সন্তানকে খেলতে পাঠিয়ে মায়ের আত্মহত্যা! কপিলমুনিতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের নামের তালিকা টানিয়েছে থানা পুলিশ