করোনা আক্রান্ত রোগিকে বাড়িতে চিকিৎসা: কেশবপুর জুড়ে আতংক প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২০ | আপডেট: ২:৩২:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২০ মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর): করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়ায় যশোরের কেশবপুরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে করোনা ইউনিটে নিয়ে চিকৎিসার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সোমবার সকালে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মেডিকেল টিম আক্রান্ত ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করে যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে খুলনায় প্রেরণ করেছে। যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারীর (৩৩) করোনা উপসর্গ দেখা দিলে ৮ এপ্রিল ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রেরণ করা হয়। এরপর তিনি সেখান থেকে কেশবপুর উপজেলা ইমাননগর গ্রামে শশুর বাড়িতে অবস্থান করেন। রোববার খুলনা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই স্বাস্থ্য সহকারীর নমুনায় করোন ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানান। এ খবরে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ আবু শাহীন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডাঃ দিলীপ রায় ইমাননগর গ্রামে উপস্থিত হয়ে করোনায় আক্রান্ত ওই স্বাস্থ্য সহকারীকে শশুর বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । এসময় কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান, মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফীসহ পুলিশ প্রশাসসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ওই বাড়িটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হয়। এদিকে কেশবপুর শহরের অনন্ত সড়কস্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মাসুদুর রহমানের বাসার ভাড়াটিয়া নিকটাত্মীয় হওয়ায় আক্রান্ত ওই স্বাস্থ্য সহকারীর যাতায়াত সন্দেহে ওই বাড়িটিও লকডাউন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীকে ইমাননগর গ্রামে তার শশুর বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে গোটা কেশবপুরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর শশুর বাড়িতে একটি মাত্র বাথরুম রয়েছে। ওই বাথরুমই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিসহ বাড়ির সকলেই ব্যবহার করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্বাস্থ্য কর্মী বলেন, একই বাথরুম ব্যবহার করাই ওই বাড়ির সকলেই করোনায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই বাড়িতে একটি মাত্র বাথরুম থাকাই কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দিন করোন আক্রান্ত ব্যক্তির বাথরুম ব্যবহারের জন্য একটি কমোড চেয়ার দিয়েছেন। এলাকাবাসী তাকে দ্রুত ওই গ্রাম থেকে নিয়ে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার দাবি জানান। পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, তার ইউনিয়নের ইমাননগর গ্রামে শশুরবাড়িতে রেখে মনিরামপুরের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসা করানোর খবরে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ায় দাবি করেছেন তিনি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেন বলেন, সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মেডিকেল টিম ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির স্ত্রী ও শিশু সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করে যশোর সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ওই স্বাস্থ্য সহকারীর চিকিৎসাসহ নমুনা সংগ্রহকারী তিনিসহ ১০ জন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ আবু শাহীন বলেন, করোনায় আক্রান্ত মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারীকে অবস্থান করা তার শশুর বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ দিলীপ রায় বলেন, করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার অবস্থার অবনতি হলে যশোর নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি অবস্থান করা তাঁর শশুরবাড়ি ও কেশবপুর শহরে তাঁর নিকতাত্মীয়ের এক ভাড়া বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৮৬ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন কেশবপুরে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ: পিতা-পুত্র সহ নিহত ৩ আজ মধু কবির ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী, সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু