তালার জেঠুয়া বিসমিল্লাহ ব্রিক্স ৩ শতাধিক দরিদ্র শ্রমিকের আশার আলো প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২০ | আপডেট: ৭:৫০:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২০ এম,এ,মান্নান, তালা(সাতক্ষীরা): প্রশাসনের প্রায় সকল দপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে তালার জেঠুয়া বিলে কপোতাক্ষ নদ সংলগ্নে বিসমিল্লাহ ব্রিক্স’র কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখানে প্রতিদিন প্রায় ৩শ নারী-পুরুষ পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক পরিবেশে কাজ করছে। বিশেষত স্থানীয় নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা নিজ বাড়িতে থেকে এই ভাটায় কাজ করায় তারা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং নিজ পরিবারের খোজ রাখতে পারছে। কিন্তু উৎপাদনের শুরুতেই একটি কূ-চক্রী মহল তাদের হীন স্বার্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে এই ভাটার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ভাটায় কর্মরত ৩শতাধিক শ্রমিক সহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানাগেছে, তালা উপজেলার জেঠুয়া বিলের কপোতাক্ষ নদের তীরে আধুনিক ও মান সম্পন্ন পরিবেশে স্থাপন করা হয় বিসমিল্লাহ ব্রিক্স। চলতি মৌসুমে এই ভাটায় ইট উৎপাদন শুরু হয়। মান সম্পন্ন ইট প্রস্তুত করায় ইতোমধ্যে এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ভাটার ইট। বিসমিল্লাহ ব্রিক্স’র সহকারী ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন জানান, এলাকার ভাটা শ্রমিকদের কাজের সুবিদার্থে জালালপুর ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ¦ হাফেজ জহিরুল ইসলাম এখানে ভাটা তৈরি করেন। এজন্য তিনি সর্বোচ্চ বাজার মূল্যে ৩বিঘা জমি ক্রয় সহ বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বাৎসরিক হারি দিয়ে ১০ একর জমি লিজ নেন। তিনি জানান, সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলতি মৌসুমের শুরুতেই দূরের শ্রমিকদের জন্য মানসম্পন্ন থাকার ঘর র্নিমান, ১০০ ফুটের উর্দ্ধে উচ্চতার চিমনি নির্মান ও কয়লা ব্যবহার করে ভাটার উৎপাদন শুরু হয়। এখানে সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩শ’ নারী ও পুরুষ সম-পারিশ্রমিকে কাজ করছে। ভাটার ব্যবস্থাপক জি. এম. মফিজুল ইসলাম বলেন, বাইরের শ্রমিকদের সন্তানের লেখাপড়ার সুযোগ, বাজার ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা দ্রুত পাবার বিষয়টি লক্ষ্যে রেখে এখানে আধুনিক হাওয়া ভাটা স্থাপন করা হয়। চলতি মৌসুম থেকে এখানে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে এবং সঠিক মাপে ইট তৈরি করা হচ্ছে। এই ভাটা থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করবে এবং বিশেষত স্থানীয় শ্রমিকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবে। অথচ একটি মহল তাদের হীন স্বার্থ উদ্ধার করতে না পেরে ইতোমধ্যে এই ভাটার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সহ অপপ্রচার শুরু করেছে। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আনারুল সরদার, এনায়েত শেখ, মহিদুল ইসলাম ও শেখ তুহিন সহ একাধিক ভাটা শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কপোতাক্ষ নদের তীরে জেঠুয়ার এই বিল এক সময় জলাবদ্ধ থাকতো। এছাড়া নিচু জমি হওয়ায় এখানে ফসল উৎপাদন হতোনা। এখানে ইট ভাটা করায় তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। জেঠুয়া গ্রামের রুমা বেগম (২৫) জানান, স্বামী মারা যাবার পর সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়। এছাড়া সংসারে অভাব-অনটন চরম আকার ধারন করে। চলতি মৌসুমে এই ভাটায় কাজ করে তিনি দারিদ্রতা দূর করে সংসার দেখভাল ও সন্তানদের লেখাপড়া করাতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর মতো একই অবস্থা এখানে কাজ করা আরো একাধিক নারীর। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সমাজ কর্মী মো. অলিয়ার রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে ভাটা স্থাপন হওয়ায় অনেক বেকার নারী ও পুরুষ কাজের সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন ৩শতাধিক শ্রমিক’র কারনে মৃতপ্রায় জেঠুয়া বাজারে বেচা-কেনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আশপাশে নতুন করে দোকান নির্মিত হচ্ছে। তাছাড়া অনুমোতি সাপেক্ষে ভাটা মালিক নিজ খরচে দুটি গুরুত্বপূর্ন রাস্তা মেরামত করে দেয়ায় মানুষ ব্যপক উপকৃত হয়েছে। এই ভাটার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহল নানান অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বলেও তিনি জানান। ভাটা মালিক হাফেজ জহিরুল ইসলাম বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মান সম্পন্ন ইট প্রস্তুত ও এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করার লক্ষ্যে আধুনিক ইট ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। দূর থেকে বিলের মাটি কিনে এনে এখানে ইট তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, এই ভাটায় বিনিয়োগ করা অর্থ উঠে আসার পর এখান থকে প্রতিবছর যে লাভ হবে তার ১ ভাগ নিজের জন্য রেখে বাকি ২ভাগ সামাজিক, ধর্মীয় এবং এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। সুন্দরবনটাইমস.কম/নিজস্ব প্রতিবেদক বিসমিল্লাহ ব্রিক্স সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৪২ বার আপনার মতামত লিখুন : আরও পড়ুন তালায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরীর বাল্যবিবাহে নিষেধাজ্ঞা জারি তালায় অবৈধ সেমাই ফ্যাক্টরিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান