ঢাকা ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠাপর্বে আহ্ছানউল্লার ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশিত: ৫:৫০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯ | আপডেট: ৫:৫০:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯

সোহাগ মাল্টিমিডিয়া এন্ড ট্র্যাভেলস

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বাংলাদেশের ইতিহাস অভিন্ন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রায় সব আন্দোলনই অঙ্কুরিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী প্রাঙ্গণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর শুভক্ষণে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। একটি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও জ্ঞান চর্চার প্রধান বাতিঘর হিসেবে এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক পালাবদলের প্রধানতম কেন্দ্র হিসেবে বিগত একশ বছরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের পথচলায় রয়েছে বৈচিত্রময় আড়ম্বর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার অবদান ও সম্পৃক্ততা ছিল অনস্বীকার্য। আহ্ছানিয়া মিশনের সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।


শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার নলতায় কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠাতা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ১৪৬তম জন্মবার্ষিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ভুমিকা শীর্ষক এক সেমিনারের বক্তারা এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এম.পির সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর রশিদ আসকারী। সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ড.আবদুল মজিদ, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের প্রাক্তন সভাপতি আলহাজ্জ মুহাম্মদ সেলিমউল্লাহ,সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ হাবিবুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবর রহমান, কোলকাতা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি অধাপক গোলাম মহিউদ্দীন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিউিটের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, খানবাহদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এ.এফ.এম এনামুল হক, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো. এনামুল হক।


জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ড. আবদুল মজিদ তার বক্তব্যে বলেন, অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একবারে সূচনালগ্ন হতে প্রতিষ্ঠার দিন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ, বলিষ্ঠ-সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন আহ্ছানউল্লা। ১৯১২ সালে নাথান কমিশনের টিচিং সাব-কমিটির সদস্য, ১৯১৪ সালে হর্ণেল কমিটির সদস্য, ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য, ১৯১৯ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার খসড়া আইনের ধারা-উপধারার ওপর মতামত প্রদানকালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট বিশেষ কমিটিতে একমাত্র বাঙালী মুসলমান সদস্য খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের চাপের মুখেও নিজের অবস্থানে অচল অটল থাকেন।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর রশিদ আসকারী বলেন,খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার ও সাহিত্য অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, অসামান্য মনীষার বিকিরণে, কর্মের ব্যাপ্তিতে, সুচিন্তার উৎকর্ষে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন বাঙালি মুসলমানের রেনেসাঁযুগের অগ্রগণ্য এক উজ্জ্বল মনস্বী। শিক্ষা চেতনায় তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণশক্তি, ব্যক্তিত্বের অভিনবত্ব, নিরীক্ষাপ্রবণতা আর স্বজাতিকে ক্রমশ উত্তরণের প্রয়াসে সময়ের প্রয়োজনে তিনি অনিবার্য হয়ে উঠেছিলেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অগ্রগণ্য ভমিকার বাইরেও অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিস্তারে তিনি অসংখ্য-অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। পরীক্ষার খাতায় রোল নম্বর লেখার প্রবর্তনসহ অসংখ্য শিক্ষা সংস্কারে তিনি অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেছিলেন।


বক্তারা আরো বলেন,অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একবারে সূচনালগ্ন হতে প্রতিষ্ঠার দিন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ,বলিষ্ঠ-সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা।
অনুষ্ঠান শেষে সেখানে ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদের লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা পর্বে খানবাহাদুর আহছান উল্লার ভুমিকা এবং এ.এফ.এম এনামুল হকের লেখা খানবাহাদুর আহছান উল্লা রচনা অভিধান নামক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

 

 

 

সুন্দরবনটাইমস.কম/শা:গো:


আপনার মতামত লিখুন :

নিজস্ব প্রতিবেদক